Advertisement |
(১)
.সামসুর মাথায় বিশাল জট পেকে আছে। যাকে বলে একদম মেয়েদের চুলের মত জট পাকা।
.
তাই সে বাথরুমের কমোডে গিয়ে বসে রইল। এটা তার অভ্যাস। যেকোন চিন্তা সে রুমে বসে করতে পারে না, তার বাথরুমে যেতে হয়।
.
এটা তার প্রায় ছোট বেলা থেকেই অভ্যাস।
.
ছোট বেলায় একবার সে পাশের ঘরের মঞ্জুর সাথে মারামারি করে, তার লুঙ্গি খুলে দিয়ে আসছিলো। সে এক গুরুতর অপরাধ। এটা নিয়ে মঞ্জুর মা বাবা বিচার নিয়ে আসছে। সে তখন ভয়ে বাথরুমে লুকাইছিল। এর মুক্তির উপায় খুজতে ছিল। এবং কি এক অলৌকিক ভাবে সে এই গুরুতর সমস্যার সমাধানও বের করে ফেলছে।
.
সেই থেকে তার এই বাথরুমের কমোডের উপর বিপুল আস্থা।
.
এবারের চিন্তার বিষয়টা আগের সব গুলা সমস্যার চাইতে বেশি জটিল। মেয়েঘটিত সমস্যা। যা সবসময়ই একটু জটিল হয়ে থাকে।
.
সামসু বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সমস্যাটা নিয়ে একটা স্ট্যাটাস দিল। কিন্তু সেখানে যা দেখলো তাতে তার মনে হলো এটা দেখার আগে ম্যানহোলে পড়ে আত্মহত্যা কেন করলো না।
.
যাই হোক, ঘটনাটা শুরু থেকেই বলি সে তার বাসার ছাদ থেকে পাশের বাসার ছাদে দাঁড়ানো এক মেয়েকে ফ্লাইং কিস ছুঁড়েছিল।
.
কয়েকদিন যাবতই সে এই মেয়েকে দেখতে ছিল। সে একটা ইংরেজি বইতে পড়েছিল মেয়েদেরকে এইভাবে ফ্লাইং কিস দিলে মেয়েরা পটে যায়। কিন্তু সামসু সাব এইটা বুঝে উঠতে পারে নাই যে এটা ইংরেজদের দেশ না।
.
কিন্তু কিস ছুঁড়ছে ওইটা কোন প্রব্লেম না। প্রবলেম হচ্ছে সে ওই মেয়েটাকে কিস ছুঁড়ে নাই যেটাকে সে আগের দিন দেখেছিল।
.
.
(২)
.
.
সীমার অভ্যাস প্রতিদিন কিছু সময় ছাদে কাটানো। ভালোই লাগে। কিন্তু তার বাবার জন্য পারে না। সীমার কাছে তার বাবা একটা অদ্ভুত মানুষ। তার কিছু কিছু কাণ্ডকারখানা দেখলে সীমার মেজাজটাই খারাপ হয়ে যায়।
.
এই যেমন তাদের পরিবারের সকল মেয়ে সদস্যের জামা একরকম। তার মায়ের যেই রকম জামা ঠিক সেইম তার নিজেরও সেইরকম জামা, এবার তার বড় বোনেরও সেই রকম জামা।
.
এটা নিয়ে প্রতিবার জামা কিনার সময় তার বাবার সাথে ঝামেলা হয়। কিন্তু শেষে দেখা যায় ঠিকই সবাই একরকম জামাই কিনছে। কারন তারা তাদের বাবার মলিন মুখ দেখতে পারে না।
.
ইদানীং সে ছাদে উঠলে একটা ছেলেকে দেখে, পাশের বাসায়ই থাকে। সীমা বুঝতে পারে ছেলেটা তার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু সে পাত্তা দিল না এতো।
.
পরদিন তার মা সে যেই কালারের জামা পড়েছে সেই কালারের জামা পড়ে ছাদে গেল।
.
আহ!! কি সুন্দর বাতাস, মনে মনে এই সব ভাবতে ভাবতে সীমার মা ঘুরে পাশের ছাদের দিকে তাকাতেই প্রথমে শিহরিত তারপর বিস্মিত, তারপর হতচকিত, অতঃপর রাগান্বিত হল।
.
.
(৩)
.
.
সামসু কিস ছুঁড়ার পরমুহূর্তেই লক্ষ্য করলো চরম ভুল হয়ে গেছে। এটা তো সেই মেয়ে না, এ তো মেয়েটার মা।
.
.
কিন্তু বন্দুকের গুলি যেমন ছোঁড়ার পর এর ফেরানো যায় না, ঠিক এইটাও আর ফেরানো যাবে না।
.
আর এই কারনেই সামসু বাথরুমে বসে বসে এটার সমাধান খুঁজছে। কারন সে শুনেছে ওই মহিলার বড় ছেলে নাকি বড় গুন্ডা, নক কাঁটা বদরুল। সে সবার নক কেটে দেয়।
.
সামসু আবার বড় শখ করে তার নক গুলা বড় করছে। এখন যদি তার সব গুলা নক কেটে দেয় তাহলে তো সে হার্টফেল করেই মারা যাবে।
.
সে এক বিশাল ক্রাইসিস।
.
সো ফ্রান্স, আপনারা এই কঠিন সমস্যা থেকে এই অবলা, দুর্বলা সামসুকে রক্ষা করার কিছু টিপস দেন। নাহলে যে বেচারাকে সারাজীবন বাথরুমেই কাটাতে হবে।
0 comments: