Saturday, March 25, 2017

বৃষ্টিস্নাত রাতে স্মৃতিচারন। পার্ট ১।

বৃষ্টিস্নাত রাতে স্মৃতিচারন। পার্ট ১।
তখন আমি ক্লাস সিক্সে পড়ি। আমাদের একটা দোকান ছিল। আমাদের পাড়াতেই, মুদি দোকান, চাল ডাল হতে প্রায় অনেক কিছুই পাওয়া যেত।
.
ওই দোকানে রাতে শোয়া লাগতো। আমার ভাইয়া অনেক দিন ঘুমাইছে। তারপর ভাইয়ার ম্যাট্রিক পরীক্ষার আগে থেকেই সেই দায়িত্বটা আমার উপরে এসে পড়ে।
.
আমিও মহা খুশি ছিলাম। রাতে একা একা থাকা যাবে। যতক্ষণ ইচ্ছা রাত জেগে গল্পের বই পড়া যাবে। আহা শান্তি। খেলা থাকলে খেলা দেখা যাবে। রাতে বাড়ির বাইরে থাকা যাবে, এইটা ভেবেই তো আমি মহাআনন্দে ছিলাম।
.
বাড়িতে থাকতে বই পড়তে অনেক কষ্ট হত, তখন আবার আমাদের বাড়িতে কারেন্টও ছিল না। (এখনও নাই তবে সাইড লাইন আছে।) প্রচণ্ড গরম কিন্তু তারমাঝেও কাঁথা মুড়ি দিয়ে একটা গ্যাস লাইট জ্বালিয়ে ঘামতে ঘামতে বই পড়তাম। কাঁথার ভিতরে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হত তাও কাঁথা সরাতাম না। কারন তাহলে আব্বার কাছে ধরা পড়ে যাব, আর এটার শাস্তি হবে ভয়ানক।
এইসব কারনে দোকানে শোয়া নিয়ে খুব উৎসাহিত ছিলাম।
.
আর ওই (এখনো) বয়সে নিজেকে বড় প্রমান করতে আমরা খুবি চেষ্টা করি। বন্ধুমহলে এই বিষয়টা নিয়ে আমি খুবই গর্ব করতাম। আমি রাতে এই করি ,সেই করি, এটা খাই, সেটা খাই এবং এগুলা সত্যিও ছিল।
.
আমি টানা ৫বছর ধরে ঘুমাইছি দোকানে। অনেক অনেক মজার ঘটনা আছে এই ৫বছরে। বিশেষ করে বৃষ্টির দিনের ঘটনা গুলো অনেক মজার ছিল আবার কষ্টেরও ছিল।
.
আজকে বৃষ্টি হওয়াতে সেগুলো মনে পড়ে গেল। মনে করছিলাম বলবো, কিন্তু ভূমিকা নিতেই পোষ্টটা বড় হয়ে গেছে, অতীত অভিজ্ঞতা থেকে জানি বড় পোষ্ট মানুষ পড়ে না।
.
আজকে ভূমিকা টুকুই থাকুক। পরে বিস্তারিত বলবো।

পাঞ্জাবী কি জঙ্গীদের পোষাক?

পাঞ্জাবী কি জঙ্গীদের পোষাক?
আপনি শপিং মলে যাবেন, যদি পরণে পাঞ্জাবী থাকে তবে আপনাকে একটু এক্সট্রা খাতির করে চেকাপ করা হবে কারণ আপনি জঙ্গী হতে পারেন। মুখে দাড়ি থাকলে ইসলামী ড্রেস কোড মেইনটেইন করলে আপনাকে আড়চোখে পরখ করা হবে কারণ আপনি জঙ্গী হতে পারেন। একটি মেয়ে বোরখা পরে শপিং মলে ঢুকবে তার ব্যাগ খুলে চেক করা হবে আর একটি মেয়ে অর্ধনগ্ন ভাবে শপিং মলে ঢুকবে তার দিকে কামনার ঢেকুর তুলে অভ্যর্থনা জানানো হবে।
.
আচ্ছা পাঞ্জাবী কি আসলেই জঙ্গীদের পোষাক নাকি?
আমি তো যতবারই সাদা পাঞ্জাবীর উপর কালো মুজিব কোট পরিহিত সুদর্শন বঙ্গবন্ধুকে দেখি, ততবারই দেশপ্রেমের প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার শক্তি খুঁজে পাই। মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানীকে তো আমি পাঞ্জাবী ছাড়া অন্য কোন পোশাকে দেখি তাই।
.
তবে কেন আজ আমাদের সমাজে এই বর্ণবাদী আচরণ। আমাদের মিডিয়াগুলো কেনো এরকম বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধ করে আমরা আমাদের বাংলাদেশ পেয়েছি অসাম্প্রদায়িক চেতনায় নিজের অধিকার নিয়ে মাথা উচু করে বাঁচতে। যেখানে আমাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা থাকবে, রাজনৈতিক স্বাধীনতা থাকবে, কথা বলার পরিবেশ থাকবে।
.
বর্তমান প্রজন্ম কেন রাজনীতি কে ঘৃণা করবে? আমাদের উচিত রাজনীতিটাকে কলুষ মুক্ত করা। আমরা রাজনীতিতে জড়াবো মানুষের জন্য এবং সেটা হবে জননীতি, রাজনীতি নয়। জনগণের সেবা করার জন্য রাজা হতে হয় না, সেবক হতে হয়। কিন্তু প্রকৃত পক্ষেই কি তা হচ্ছে?

Written By Md Nurullah Vai.

মারা যাওয়ার আগে কি সবাই বুঝে যায় যে সে মারা যাচ্ছে?

মারা যাওয়ার আগে কি সবাই বুঝে যায় যে সে মারা যাচ্ছে?
মারা যাওয়ার আগে কি সবাই বুঝে যায় যে সে মারা যাচ্ছে। আর কেউ বুঝে কিনা আমি জানি না কিন্তু আমি বুঝে গেছি আমি মারা যাচ্ছি।
.
একদম কেমন যেন একটা অনুভূতি হচ্ছে নিজের ভেতর। কোথা থেকে যেন কেউ শুধু বলছে, তোর সময় শেষ।
.
কোন জীবিত মানুষকে সেটা ঠিক বোঝানো যাবে না। শুধু যার সময় হয়ে আসছে সেই বুঝতে পারবে। এটা অন্তত আমার কাছে মনে হচ্ছে।
.
কারন আমিও অনেক মৃত্যুর আগের স্ট্যাটাস দেখেছি, কিন্তু ওই ফিলিংটা আসে নাই, আমি জানি এটা পড়ে আপনাদেরও আসবে না।
.
মজাটা আসলে এখানেই, কেউ কারোটা বুঝে না।
আমার কাছে বিষয়টা খুবই উপভোগ্য মনে হচ্ছে, আমি বলবো, অথচ কেউ বুঝবে না। হা হা, কি দারুন!!
.
প্রায় সারাজীবনের সব গুলো টুকরো টুকরো স্মৃতি একদম চোখের সামনে ভাসছে, মনে হচ্ছে যেন পেছনে ফেলে আসা পুরো জীবনটাই একদম আমার সামনে এসে হাজির।
.
সারাজীবন আর কোথায়, মাত্র ১৮ টা বছর, তার মধ্যে ৫ বছর বয়সের আগের কথা গুলোতো মনেই নাই। বড্ড ভুলো মনা আমি।
.
এখন মনে হচ্ছে যেগুলো মনে আছে সেগুলো ভুলে গিয়ে ওই স্মৃতি গুলো মনে থাকলেই ভালো হত, নিজেকে নিষ্পাপ মনে হত। কিন্তু সেটাতো হচ্ছে না।

স্মৃতি নিয়ে আমার প্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ স্যার একটা কথা বলেছেন,

"স্মৃতি নিয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে, স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে থাকা অনেক ভালো, কারন, স্মৃতি মানুষ কে কষ্ট দেয়, মানুষ কে কাঁদায়। কিন্তু, স্বপ্ন মানুষ কে নতুন কিছুর আশায় রাখে!"
.
কিন্তু আমার যে সেই স্বপ্নটুকুও নেই। সামান্য যে স্মৃতিটুকু মনে আছে সেগুলোই যে আমার সম্বল। সেটুকু আঁকড়ে ধরেই যে আমার জীবন চলছে।
.
স্মৃতি আমাকে কাঁদায়, আমি কাঁদি। আমাকে হাসায়, আমি হাসি। এইভাবেই তো বেশ চলছে দিন, স্বপ্ন ছাড়াই।
.
লাস্ট কবে যে ভালো কাজ করেছি মনেই আসছে না। এখনতো আমার কাছে মনেই হচ্ছে না আমি কোনদিন কোনো ভালো কাজ করেছি।
.
হঠাৎ একটা কথা মনে পড়ল, মারা যাওয়ার পরে সবাই ওই লোকের ভালো গুন গুলো বলে, আর বলে লোকটা বড়ই ভালো ছিল, আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করুক। কিন্তু আমার বেলায় কি বলবে মানুষ। আমিতো আমার জীবনে কখনো ভালো কাজ করি নাই।
.
আচ্ছা, মারা যাওয়ার পরে কি হবে। নাহ, এটা ভেবে লাভ নেই। কোন মৃত ব্যক্তিতো আর কবর থেকে উঠে এসে তার অভিজ্ঞতার কথা বলবে না।
আর কিছু জিনিস অজানা থাকাই ভালো।
.
আচ্ছা, আমার মৃত্যুর পরে কি কেউ কাঁদবে। আমিতো এখন পর্যন্ত কারো মারা যাওয়ার খবরে কাঁদি নাই।
.
আচ্ছা আমার মা, বাবা,ভাই,বোন ছাড়া আর কেউ কি কাঁদবে আমার জন্য?
কাঁদবেও বা কি জন্য, কিইবা করেছি মানুষের জন্য। আমিতো আগাগোঁড়াই ছিলাম স্বার্থপর।
.
আর কি লিখবো। কিছুতো আর মাথায়ও আসছে না। আচ্ছা মৃত্যুর আগে কি সবারি এরকম মাথা ফাকা হয়ে যায়?
.
আমি জানি এটা তেমন কেউ পড়বে না, যারা পড়বে তারাই আসলে ভালোবাসে আমাকে। আমি আপনাদের মনে রাখবো।
.
আচ্ছা মৃত্যুর পরে কি এগুলো মনে থাকে?

Sunday, March 5, 2017

ফ্লাইং কিস।


(১)
.সামসুর মাথায় বিশাল জট পেকে আছে। যাকে বলে একদম মেয়েদের চুলের মত জট পাকা। 
.
তাই সে বাথরুমের কমোডে গিয়ে বসে রইল। এটা তার অভ্যাস। যেকোন চিন্তা সে রুমে বসে করতে পারে না, তার বাথরুমে যেতে হয়। 
.
এটা তার প্রায় ছোট বেলা থেকেই অভ্যাস। 
.
ছোট বেলায় একবার সে পাশের ঘরের মঞ্জুর সাথে মারামারি করে, তার লুঙ্গি খুলে দিয়ে আসছিলো। সে এক গুরুতর অপরাধ। এটা নিয়ে মঞ্জুর মা বাবা বিচার নিয়ে আসছে। সে তখন ভয়ে বাথরুমে লুকাইছিল। এর মুক্তির উপায় খুজতে ছিল। এবং কি এক অলৌকিক ভাবে সে এই গুরুতর সমস্যার সমাধানও বের করে ফেলছে। 
.
সেই থেকে তার এই বাথরুমের কমোডের উপর বিপুল আস্থা। 
.
এবারের চিন্তার বিষয়টা আগের সব গুলা সমস্যার চাইতে বেশি জটিল। মেয়েঘটিত সমস্যা। যা সবসময়ই একটু জটিল হয়ে থাকে। 
.
সামসু বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সমস্যাটা নিয়ে একটা স্ট্যাটাস দিল। কিন্তু সেখানে যা দেখলো তাতে তার মনে হলো এটা দেখার আগে ম্যানহোলে পড়ে আত্মহত্যা কেন করলো না।

যাই হোক, ঘটনাটা শুরু থেকেই বলি সে তার বাসার ছাদ থেকে পাশের বাসার ছাদে দাঁড়ানো এক মেয়েকে ফ্লাইং কিস ছুঁড়েছিল। 
.
কয়েকদিন যাবতই সে এই মেয়েকে দেখতে ছিল। সে একটা ইংরেজি বইতে পড়েছিল মেয়েদেরকে এইভাবে ফ্লাইং কিস দিলে মেয়েরা পটে যায়। কিন্তু সামসু সাব এইটা বুঝে উঠতে পারে নাই যে এটা ইংরেজদের দেশ না। 
.
কিন্তু কিস ছুঁড়ছে ওইটা কোন প্রব্লেম না। প্রবলেম হচ্ছে সে ওই মেয়েটাকে কিস ছুঁড়ে নাই যেটাকে সে আগের দিন দেখেছিল। 
.
.
(২)
.
.
সীমার অভ্যাস প্রতিদিন কিছু সময় ছাদে কাটানো। ভালোই লাগে। কিন্তু তার বাবার জন্য পারে না। সীমার কাছে তার বাবা একটা অদ্ভুত মানুষ। তার কিছু কিছু কাণ্ডকারখানা দেখলে সীমার মেজাজটাই খারাপ হয়ে যায়। 
.
এই যেমন তাদের পরিবারের সকল মেয়ে সদস্যের জামা একরকম। তার মায়ের যেই রকম জামা ঠিক সেইম তার নিজেরও সেইরকম জামা, এবার তার বড় বোনেরও সেই রকম জামা।
.
এটা নিয়ে প্রতিবার জামা কিনার সময় তার বাবার সাথে ঝামেলা হয়। কিন্তু শেষে দেখা যায় ঠিকই সবাই একরকম জামাই কিনছে। কারন তারা তাদের বাবার মলিন মুখ দেখতে পারে না।
.
ইদানীং সে ছাদে উঠলে একটা ছেলেকে দেখে, পাশের বাসায়ই থাকে। সীমা বুঝতে পারে ছেলেটা তার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু সে পাত্তা দিল না এতো।
.
পরদিন তার মা সে যেই কালারের জামা পড়েছে সেই কালারের জামা পড়ে ছাদে গেল। 
.
আহ!! কি সুন্দর বাতাস, মনে মনে এই সব ভাবতে ভাবতে সীমার মা ঘুরে পাশের ছাদের দিকে তাকাতেই প্রথমে শিহরিত তারপর বিস্মিত, তারপর হতচকিত, অতঃপর রাগান্বিত হল। 
.
.
(৩)
.
.
সামসু কিস ছুঁড়ার পরমুহূর্তেই লক্ষ্য করলো চরম ভুল হয়ে গেছে। এটা তো সেই মেয়ে না, এ তো মেয়েটার মা। 
.
.
কিন্তু বন্দুকের গুলি যেমন ছোঁড়ার পর এর ফেরানো যায় না, ঠিক এইটাও আর ফেরানো যাবে না।
.
আর এই কারনেই সামসু বাথরুমে বসে বসে এটার সমাধান খুঁজছে। কারন সে শুনেছে ওই মহিলার বড় ছেলে নাকি বড় গুন্ডা, নক কাঁটা বদরুল। সে সবার নক কেটে দেয়। 
.
সামসু আবার বড় শখ করে তার নক গুলা বড় করছে। এখন যদি তার সব গুলা নক কেটে দেয় তাহলে তো সে হার্টফেল করেই মারা যাবে। 
.
সে এক বিশাল ক্রাইসিস। 
.

সো ফ্রান্স, আপনারা এই কঠিন সমস্যা থেকে এই অবলা, দুর্বলা সামসুকে রক্ষা করার কিছু টিপস দেন। নাহলে যে বেচারাকে সারাজীবন বাথরুমেই কাটাতে হবে।